Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

খোঁড়া সড়ক জোড়া লাগে না

মো. একরামুল কবির ও বেল্লাল হোসেন সজল, খুলনা

জুলাই ২৭, ২০২০, ০৭:২৪ পিএম


খোঁড়া সড়ক জোড়া লাগে না

খুলনা নগরীর বেশকটি সড়ক দীর্ঘদিন খুঁড়ে রাখা হলেও তা জোড়া লাগানোর কেউ নেই। যত দ্রুত খোঁড়া হয় তত দ্রুত জোড়া লাগায় না কর্তৃপক্ষ। সড়কগুলো এখন চলাচলের অনুপযোগী। তবে এই অনুপযোগী সড়ক ব্যবহার না করে কোনো উপায় নেই। ভোগান্তি এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। বর্ষা হোক বা না হোক— এই সড়কে কাদা থাকবেই।

ওয়াসা কিংবা বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস লাইন দুটোই জনগণের কল্যাণে হলেও তা এখন খাল কেটে কুমির আনার ন্যায়। সড়ক খুঁড়ে কাজ করা হয়েছে কয়েক মাস আগে। তবে এ খোঁড়া সড়ক জোড়া লাগানো গরজ নেই কর্তৃপক্ষের। খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলে স্থাপন করা বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস পাইপলাইনের সংযোগ দিতেই রাস্তাগুলো খোঁড়া হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে তাদের কাজও শেষ হয়েছে এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থও দেয়া হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশনকে (কেসিসি)। ক্ষতিপূরণের অর্থ পেয়েও সংস্কার করছে না কর্তৃপক্ষ। ফলে ভোগান্তিতে নগরবাসী। নগরীর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের প্রধান সড়ক হচ্ছে বিআইডিসি রোড। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়েই শিল্পাঞ্চলের সাধারণ মানুষসহ শ্রমিকরা যাতায়াত করেন।

মোংলাবন্দর কর্তৃপক্ষ, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, নিউজপ্রিন্ট মিলসহ বিভিন্ন কলকারখানা এবং অফিস-আদালত এ সড়কের পাশেই। প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াতে বিঘ্ন হচ্ছে এ সড়কটি ভাঙাচোরা অবস্থায় থাকায়। বৃষ্টি হলেই কাদা-পানিতে একাকার। পিচ্ছিল হয়ে পথচারীদের পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ঢুকে যায় কাদার মধ্যে।

অনেক সময় ভারি ট্রাক চলতে গিয়ে কাদার ফাঁদে আটকে গিয়ে কাত হয়ে পড়ে রাস্তাটিই বন্ধ হয়ে পড়ে। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় মানুষকে। কাদায়ভরা এ সড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করছে ভারি যানবাহন। ফলে একদিকে পুরো রাস্তায় আর কোনো গাড়ি চলাচলের উপায় থাকে না, অন্যদিকে গাড়ির চাকায় ছিটকে ওঠা কাদায় পথচারীদের পোশাক কর্দমাক্ত হয়ে যায়।

এছাড়া খালিশপুরের ১২ ও ১৮নং লাল হাসপাতাল রোড, গোয়ালখালী মোড়সহ একাধিক সড়ক বেহাল। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে নির্মাণ করা হয় শেখ আবু নাসের হাসপাতাল বাইপাস লিংক রোড। ১১ বছরেও সড়কটি আর মেরামত করা হয়নি।

সর্বশেষ ওই সড়কটি খুঁড়ে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করেছে। এতে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

প্রধান এ দুটি সড়কের আশপাশেই রয়েছে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সেক্টর সদর দপ্তর, নৌবাহিনী ঘাঁটি (বানৌজা তিতুমীর), বিএনএন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, অ্যাংকরেজ স্কুল, নৌবাহিনী ভর্তিকেন্দ্র, নাবিক কলোনি, পুলিশ লাইন, মুজগুন্নী শিশুপার্ক, ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

সড়কটি দিয়ে জনসাধারণের চলাচলে দারুণ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গেলো বছরের মাঝামাঝি থেকে এ কাজ শুরু হয়। প্রায় বছর খানেক ধরেই খোঁড়া অবস্থায় পড়ে আছে সড়কগুলো। মেরামতের জন্য নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির পক্ষ থেকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনকে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দেয়া হয়েছে।

সড়ক সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন। পাইপ স্থাপনের পর অতিবাহিত হয়েছে ৬ মাস। নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির এ কাজের কারিগরি সহায়তা দিয়েছে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড।

নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী মো. এজাজ বলেন, সড়ক সংস্কারকাজের জন্য নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির পক্ষ থেকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনকে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দেয়া হয়েছে। তারাই এটি মেরামত করবে। ফেব্রুয়ারিতে আমাদের কাজ শেষ হয়েছে বলে আমরা ক্লিয়ারিং দিয়েছি। এখন বাকিটা কেসিসির দায়িত্ব।

এ ব্যাপারে কেসিসির সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা সড়ক মেরামতের জন্য টেন্ডার আহ্বান করবো এমন সময় করোনার প্রভাব পড়তে শুরু করে দেশে।

ফেব্রুয়ারিতে তারা ক্লিয়ারিং দিয়েছে। এখন কর্পোরেশন মেরামতকাজ সম্পন্ন করবে। এর মধ্যে বর্ষা চলে এসেছে। এ অবস্থায় নতুন করে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বর্ষার মধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। যাতে পরে শুকনো মৌসুমে কাজ শেষ করা যায়।

আমারসংবাদ/এসটিএম