Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

নামে নামে যমে টানে!

শরিফ রুবেল

সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০, ০৬:১৬ পিএম


নামে নামে যমে টানে!

অপরাধীর তালিকায় নাম নেই। অতিতের থানা-পুলিশের রেকর্ডও ভালো। নেই অপরাধের সাথে কোনো সম্পৃক্ততাও। তবুও খাটছেন জেল। অপরাধ একটাই, এজাহারভুক্ত আসামির নামের সাথে মিল।

ঠিক যেনো নামে নামে যমে টানে অবস্থা। তবে অপরাধীর নামের সাথে মিল থাকলেও বাবা-মায়ের নামের সাথে রয়েছে অমিল। স্থায়ী ঠিকানায়ও মিল নেই। তারপরও করা হচ্ছে গ্রেপ্তার, পাঠানো হচ্ছে কারাগারে।

ভুক্তভোগীরা থানাপুলিশ ও আদালতকে নাম ভুলের বিষয় জানিয়েও পার পাচ্ছেন না। থানাপুলিশও গ্রেপ্তারকৃতের কথা আমলে নিচ্ছে না। ফলে  কারামুক্তির আশায় বছরের পর বছর দৌঁড়াতে হচ্ছে আদালতের বারান্দায়।

অযথা ঢালতে হচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। তবুও সহসা মুক্তি মিলছে না। কখনো কখনো নামের ভুলের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ার পরেও আইনি জটিলতায় পাচ্ছে না মুক্তি। ফলে মূল আসামির নামের সাথে মিল থাকায় কেউ মাস, কেউ এক বছর, কেউবা পাঁচ বছর ধরে জেল খাটছেন। নির্দোষের কারামুক্তিরও কোনো অগ্রগতি নেই। নেই কোনো জরুরি ব্যবস্থাও।

তাই সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার। যাচাই-বাছাই ছাড়া গ্রেপ্তার ও তদন্তে গাফিলতিতেই নিরপরাধ মানুষের কারাভোগের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আর এসব নিরাপরাধ ভুক্তভোগীদের মুক্তি দিতে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে উচ্চ আদালতকে। আবার উচ্চ আদালতের আদেশের পরও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে অন্তত ১০ জন নিরপরাধ ব্যক্তি শুধু নামের মিল ও ভুলে কারাগারে গেছেন বা ভুল প্রমাণিত হওয়ায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

তেমনই একজন বরিশালের ভোলার দিনমজুর মো. লিটন। সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির নামের সঙ্গে মিল থাকায়  দিনমজুর মো. লিটনকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়। পরে এক আইনজীবী বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনলে আদালত ওই ঘটনায় ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারককে তদন্তের নির্দেশ দেন।

গত ১ সেপ্টেম্বর বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পরে লিটনের আইনজীবী মো. শাহিনুজ্জামান জানান, আবেদনে লিটনের পরিচয় নিশ্চিত করতে তাকে সশরীরে অথবা ভার্চুয়ালি হাইকোর্টে হাজির করা ও তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দেয়া এবং তার আটকাদেশ অবৈধ এবং আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

জানা যায়, আসামি ও নিরপরাধ দুজনের নাম মো. লিটন। বাবার নাম, গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার নামও একই। পার্থক্য শুধু বয়স আর মায়ের নামে। আর এতেই একজনের অপরাধে প্রায় আট মাস ধরে কারাগারে আছেন আরেকজন।

তবে পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার হওয়া লিটন একবারের জন্যও বলেননি যে, তিনি আসামি নন। দুই লিটনেরই বাবার নাম নুর ইসলাম।

নামবিভ্রাটে নিরপরাধের কারাবরণ নিয়ে বিশ্লেষকরা বলেন, যেকোনো অপরাধীকে গ্রেপ্তারের সময় তিনি প্রকৃত অপরাধী কি-না সেটা ক্রসচেক করে নেয়া প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু দায়িত্বে অবহেলা করলে নিরপরাধীরা হয়রানির শিকার হবেন এটাই স্বাভাবিক। যাচাই-বাছাই ছাড়া গ্রেপ্তারে ঝুঁকি থাকে। মাঝে মধ্যেই শোনা যায় নামের ভুলে কারাগারে নিরপরাধ।

কিন্তু তারপরও প্রশাসনের এ বিষয়ে কোনো জবাবদিহিতা নেই বলেই একই ঘটনা বারবার ঘটছে। গণমাধ্যমে যেটা আসে আমরা শুধু সেটাই জানতে পারি, কিন্তু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমন শত শত নিরপরাধী অপরাধ না করেও নামের মিল থাকায় জেল খাটছেন।  

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নামের সাথে মিল থাকলেই আটক করা যাবে না। এতে নিরাপরাধ কেউ হয়রানির শিকার হলে বা জেল খাটলে সেটা ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে যে পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার কারণে নিরাপরাধ জেলে গেলো তার কোনো বিচার হচ্ছে না বলেই বাড়ছে এসব ঘটনা।

আবার ভুক্তভোগীরা আইনিভাবে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা থাকলেও সেটাও তারা পান না। ভুল প্রমাণিত হওয়ার সাথে সাথেই আদালতের উচিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া।

কিন্তু সেটা করতে দেখা যায় না। প্রাথমিক তদন্ত না করে কাউকে গ্রেপ্তার উচিত নয় তাহলে একই ঘটনা বারবার ঘটবে। পুলিশের এমন ভুলের জন্য ভুল আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করায় এএসআইকে শোকজ করা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে।

নামের ভুলে জেলখাটার কয়েকটি ঘটনা :
ঘটনা-১. গত ফেব্রুয়ারিতে আসামির নামের সাথে মিল থাকায় যশোরের শহরতলীর  খোলাডাঙ্গা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে তোতলা মিজানকে গ্রেপ্তার করেন কোতোয়ালি মডেল থানার এএসআই আল মিরাজ খান।

২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি শহরতলীর সুজলপুর জামতলা আকবর মিয়ার রড ফ্যাক্টরির সামনে খোলাডাঙ্গা গ্রামের সাগর, তাহের, সুজলপুরের হঠাৎপাড়ার মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান, নাজু, জাহাঙ্গীর, রিপন, রনি ও রবিউলসহ ১০-১২ জনে পোস্টার টাঙ্গাতে গিয়ে  আব্দুস সালাম মিঠুকে লক্ষ্য করে কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করে।

এ ঘটনায় আব্দুস সালাম মিঠু বাদি হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো দুইজনের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে এবং চার্জশিটে আসামির নাম মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান। পিতার নাম নূরুল হাওলাদার ও গ্রামের নাম সুজলপুর হঠাৎপাড়া উল্লেখ করা হয়।

শুধু মিজান নয়, এর আগে ২০১৯ সালে পুলিশের ভুলে যশোরে আরও তিনজন জেল খেটেছেন। ২০১৯ সালের ২০ মার্চ পুলিশ আসামির বদলে নিরপরাধ রেখা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। আসল আসামি বিদেশ থাকলেও স্বামীর নামের মিলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল মুক্তি পান তিনি। রেখা খাতুনের মতো পুলিশের ভুলে তিন মাস কারাভোগ করেন যশোরের আরেক যুবক সবুজ খান। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তিনিও মুক্তি পান। নাম ভুলে আটদিন কারাবাস করেন যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ দফাদার (৬১)। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশে মুক্তি পান তিনি।

ঘটনা-২. মূল আসামির নামের সাথে মিল থাকায় জেল খাটছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহিন। জানা গেছে, যুবলীগ নেতা রাসেল হত্যাকাণ্ডের আসামি শাহীন আহাম্মেদ শাহীনের পরিবর্তে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ছাত্র শাহীনকে। গ্রেপ্তার হওয়া শাহীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র।

রাজশাহী রেল ভবনে গেলো বছরের ১৩ নভেম্বর ১৪  নিজাম কাউন্সিলরের বিরোধের জেরে সুজন, শাহীন ও তাদের সহযোগীরা যুবলীগ নেতা রাসেলকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। আহত রাসেল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

পরে পুলিশ নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জেএসসি পরীক্ষার্থী মুজাহিদ ও কামালউদ্দিন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শাহীনসহ নিরাপরাধ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় জড়িত না থাকায় এজাহারে এই তিন ছাত্রের নাম ছিলো না।

ঘটনা-৩. নামের সঙ্গে কিছুটা মিল থাকায় প্রায় চার মাস ধরে জেল খাটছেন খুলনার সালাম ঢালী (৫৭) নামে এক নিরপরাধ ব্যক্তি। সালাম ঢালীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ইলেকট্রিক সামগ্রী চুরির ঘটনায় মোংলা থানায় একটি মামলা হয়েছিল।

২০০৯ সালের ৩০ জুলাই ওই মামলার রায়ে আসামি আবদুস সালামের দুই বছরের সাজা হয়। সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আদালত থেকে সোনাডাঙ্গা থানায় পাঠানো হয়। ১১ বছর পর গত ১১ মার্চ রাতে পুলিশ বাসায় গিয়ে সালামকে আটক করে সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে যায়।

ওই মামলার প্রকৃত আসামি হচ্ছে শেখপাড়া মেইন রোডের মৃত শফিজ উদ্দিনের ছেলে আবদুস সালাম। তাকে না ধরে অন্য একজনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি জানান, পুলিশ ভুল করে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। শিগগিরই বিষয়টি লিখিতভাবে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জানানো হবে।

ঘটনা-৪. নামের প্রথমাংশের মিল থাকায় নিরপরাধ রবিউলকে গ্রেপ্তার করে করাগারে পাঠানো হয়েছে। ছয় লক্ষাধিক টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে বাগেরহাটের প্রদীপন মানবিক উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) দায়েরকৃত মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামির পরিবর্তে ভিন্ন নাম, বাবার নাম ও ঠিকানার এস এম রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিরাপরাধ রবিউল ইসলাম সেই থেকে কারাভোগ করছেন। বাবা নাম ডা. আমানুল্লাহ, ভাইয়ের নাম রবিউল ইসলাম, ঠিকানা সাতক্ষীরা শহরের কেবি সড়কের মুনজিতপুর এলাকায়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সঙ্গে তার ভাইয়ের নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা কোনো কিছুর মিল নেই।  

ঘটনা-৫. গাজীপুরের শ্রীপুরে আসামির সঙ্গে নাম ও বাবার নামের মিল থাকায় এক চা দোকানিকে আটক করে জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ। গত ১৭ জানুয়ারি বিকালে তাকে চায়ের স্টল থেকে আটক করে শ্রীপুর থানা পুলিশ। মামলার মূল আসামি বাবার নাম নুর মোহাম্মদ, মা রহিমা খাতুন। পুলিশের ভুলে গ্রেপ্তার হওয়া কেওয়া পশ্চিম খণ্ড মসজিদ মোড় এলাকার নুর মহোম্মদের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম। বাবার নামও নূর মোহাম্মদ, মায়ের নাম জামিনা খাতুন।

ঘটনা-৬. শুধু বাবা ও নিজের নামের সঙ্গে মাদক মামলার এক আসামির নামের মিল থাকায় তিন মাস ধরে জেল খাটছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক রুবেল। নিরাপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার ঘটনায় ভুল স্বীকার করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার ওসি। এদিকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের।

ঘটনা-৭. পিতার নাম ও বাড়ির ঠিকানার মিল থাকায় দণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল রানার পরিবর্তে বাবুগঞ্জ উপজেলার আব্দুল কাদের জেল খাটছেন।  জানা যায়, জালিয়াতি করে ইউসিবিএল ব্যাংকের ঢাকার বংশাল শাখা থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০০৮ সালে শাহবাগ থানায় মামলা হয়। ১৬ সালে কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত।

ঘটনা-৮. বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ভুলে আসামি না হয়েও জেল খাটছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা রহমতপুর ইউনিয়নের ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের মো. আশ্রাব আলী হাওলাদারের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন (২৭)।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে বরিশাল বিমানবন্দর থানার এসআই জালাল উদ্দিন মো. জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেন।

জানা যায়, ঢাকা মেট্রো বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা নং-২৮৩/১৭ এবং ঢাকা মিরপুর থানার মামলা নং- ১০৬(৭)১৩, ধারা ২৫(ক) বিশেষ ক্ষমতা আইনের ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি বরিশাল বিমানবন্দর (বিএমপি) থানার ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের মৃত. আশরাফ আলীর ছেলে মো. ইব্রাহীম হাওলাদারের পরিচয়ে বরিশাল বিমানবন্দর থানার এ এস আই মো. জালাল উদ্দিন মো. জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেন এবং ১৯ ফেব্রয়ারি জেলহাজতে পাঠান।

নামের ভুলে নির্দোষ ব্যক্তি জেল খাটার ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। সবশেষ খুলনার সালাম ঢালি নামে এক ব্যক্তির সাথেও এমন ঘটনা ঘটেছে। পরে উচ্চ আদালত এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও সালাম ঢালিকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

মাঠপর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের খামখেয়ালিপনা কিংবা অনিচ্ছাকৃত ভুলেও ঘটতে পারে এমন ঘটনা, তবে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে মাঠপর্যায়ে পুলিশ সদর দপ্তরের কি নির্দেশনা থাকবে আর খুলনার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি-না?

এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে পুলিশ দপ্তরের এআইজি মিডিয়া সোহেল রানার মুঠোফোনে মেসেজ ও একাধিকবার ফোন করেও কোনো জবাব মেলেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান আমার সংবাদকে বলেন, ‘নামের ভুলে নির্দোষ ব্যক্তির জেলে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন।

তাই প্রথমে পুলিশের উচিত মামলা গ্রহণ করার আগে শুধু আসামির নাম নয়, তার বাবা-মা ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা একাধিকবার যাচাই-বাছাই করে তারপর মামলা করা।

তারপরও যদি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ইচ্ছাকৃত ভুলে কোনো নিরপরাধ মানুষ হয়রানির শিকার হন সেটা হবে ফৌজদারি অপরাধ। এর জন্য তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

প্রয়োজনে পুলিশ রেগুলেশন বেঙ্গল পরিবর্তন বা সংশোধন করে এমন অপরাধ যেসব পুলিশ সদস্য করবে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার বিষয়টি সংযোজন করতে হবে। তাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি কম ঘটবে। পুলিশও অধিকতর সচেতন হবে।’

আমারসংবাদ/এআই