Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪,

ভারতে বিক্ষোভের স্বাক্ষী ট্রাম্প, নিহত ৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০, ০৮:১০ এএম


ভারতে বিক্ষোভের স্বাক্ষী ট্রাম্প, নিহত ৭

 

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে প্রথমবারের মতো ভারত সফরে এসে রণক্ষেত্রের স্বাক্ষী হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সফরের মাঝেই দিল্লিতে সিএএর সমর্থক ও বিরোধীদের মাঝে সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত সাতজনের প্রাণহানি ঘটেছে।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তার ভারত সফরে যেদিন দিল্লি পৌঁছেছেন - সেদিনই রাজধানীতে নাগরিকত্ব আইন বিরোধী তীব্র বিক্ষোভে অন্তত তিন জন নিহত হয়েছেন। গত বছর দেশটির পার্লামেন্টে নতুন এই আইন পাস হয়ে যাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী নয়াদিল্লিতে একদিনে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংঘাত-সংঘর্ষে দিল্লিতে এক পুলিশ সদস্য ও ছয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

আনন্দবাজার জানায়, মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালেও নতুন করে শুরু হয় সংঘাত। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে গত তিন দিন ধরেই ব্যাপক সংঘর্ষ হয় সেখানে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, সিএএ-বিরোধী ও সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষের মাঝে যানবাহন পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিক্ষোভ অব্যাহত থাকায় মঙ্গলবার দিল্লির উত্তরাঞ্চলে আরও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গোটা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দিল্লি পুলিশও। তাদের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসা অব্যাহত বলে ফোনে লাগাতার অভিযোগ পাচ্ছি আমরা।’

সিএএ সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ চরম আকার ধারণ করায় গতকালই রাজধানীর একাধিক মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছিল। এ দিন জাফরাবাদ, মৌজপুর-বাবরপুর, গোকুলপুরী, জোহরি এনক্লেভ এবং শিব বিহার মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই সমস্ত স্টেশনে বন্ধ রাখা হয়েছে মেট্রো চলাচলও। উত্তর-পূর্ব দিল্লির সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলও বন্ধ রাখা হয়েছে। একাধিক জায়গায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা।

রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা কেন্দ্রের হাতে রয়েছে। তা নিয়ে গতকালই লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজলের সঙ্গে একদফা কথা হয় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের। বাহিনী পাঠানো হবে বলে বৈজল তাকে আশ্বস্ত করেছেন বলে সেই সময় জানান কেজরীবাল। কিন্তু এ দিন নতুন করে সহিংস ছড়ানোয় ফের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।

টুইটারে কেজরীবাল লিখেছেন, ‘দিল্লির কিছু জায়গায় যে পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে চিন্তিত আমি। শহরের সর্বত্র যাতে শান্তি বজায় থাকে, একজোট হয়ে আমাদেরই তা সুনিশ্চিত করতে হবে। সকলকে আমার অনুরোধ, সহিংস ত্যাগ করুন। যেখানে যেখানে বিক্ষোভ হচ্ছে, সেখানকার বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসছি আমি। পদাধিকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা হবে।’

দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল রাতেই দিল্লি পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই মুহূর্তে রাজধানীতে রয়েছেন। তাই যত শীঘ্র সম্ভব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ দিন দুপুরেও অরবিন্দ কেজরীবাল, অনিল বৈজল এবং অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা সাহের।

সিএএ-র বিরুদ্ধে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই অবস্থান বিক্ষোভ চলছিল জাফরাবাদ, সীলামপুর-সহ একাধিক জায়গায়। কিন্তু রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সেখানে সিএএ-র সমর্থনে পাল্টা মিছিল করেন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। তিন দিনের মধ্যে বিক্ষোভ না সরালে তারা কাউকে মানবেন না, রাস্তায় নেমে আসবেন বলে হুমকি দেন তিনি। তারপরই জাফরাবাদ-সহ আশাপাশের এলাকার পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। সিএএ বিরোধীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন সিএএ সমর্থকরা।

গতকাল মৌজপুর, গোকুলপুরী-সহ একাধিক এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। তাতে এক পুলিশকর্মী-সহ ৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন হেড কনস্টেবল রতনলাল, শাহিদ, মহম্মদ ফুরকান, রাহুল সোলাঙ্কি এবং নাজিম। বাকি দু’জনকে শনাক্ত করা যায়নি। এ ছাড়াও ইটের আঘাতে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

আমারসংবাদ/জেআই