Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪,

বিভিন্ন দেশে বাড়ছে বাঘ হত্যা ও পাচারের সংখ্যা

প্রিন্ট সংস্করণ॥ প্রমিতি রহমান

ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৬:২১ এএম


বিভিন্ন দেশে বাড়ছে বাঘ হত্যা ও পাচারের সংখ্যা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দিন দিন বাঘের সংখ্যা কমছে। বাড়ছে বাঘ হত্যা ও পাচারের সংখ্যা। ‘ট্রাফিক’ নামের একটি সংস্থার জরিপে বলা হয়, একবিংশ শতাব্দীতে ২ হাজার ৩০০টির বেশি বাঘ হত্যা কিংবা পাচার করা হয়েছে। ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এই ১৯ বছরে বিপুলসংখ্যক বাঘকে হত্যা কিংবা অবৈধভাবে পাচার করা হয়েছে। চলতি বছরের ২২ আগস্ট জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে ‘ট্রাফিক’ নামক এই সংস্থাটি। ট্রাফিকের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পরিচালনা বিভাগের প্রধান কনিতা কৃষ্ণ স্বামী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বাঘের সংখ্যা এভাবে কমে যাওয়া ভীষণ উদ্বেগজনক। বাঘকে রক্ষা করার এই লড়াইয়ে আমরা হেরে যাচ্ছি। কথা বলার সময় শেষ, এখন কাজ দেখানোর পালা। বাঘের সংখ্যা যেন আর না কমে, সে জন্য কথাকে কাজে পরিণত করতে হবে। জরিপে বলা হয়, ১৯০০ সালে বিশ্বজুড়ে বাঘের সংখ্যা ছিলো এক লাখের বেশি। কিন্তু ২০১০ সালে এ সংখ্যা কমতে কমতে এসে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২০০। এরপর আবার বাঘের সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও হত্যা এবং পাচারের হার বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩ হাজার ৯০০ বাঘ আছে বলে ট্রাফিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত ১৯ বছরে বিশ্বের ৩২টি দেশ থেকে পাচার করা দুই হাজারের মতো বাঘ জব্দ করা হয়েছে। মূলত বাণিজ্যের উদ্দেশ্যেই বাঘ পাচার করা হয়। পাচারকারীদের কাছে বাঘের শরীরের সবচেয়ে লাভজনক অংশ হিসেবে বিবেচিত হয় চামড়া। প্রতিবছর গড়ে ৫৮টি বাঘের পুরো শরীরের চামড়া জব্দ করা হয়ে থাকে। অবৈধভাবে বাঘ পাচারের পেছনে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাঘ প্রজনন কেন্দ্রগুলোর বিশেষ ভূমিকা আছে। প্রজনন কেন্দ্রগুলো বাঘ সংরক্ষণে তেমন উদ্যোগী হচ্ছে না। বাংলাদেশের সুন্দরবনে বছরে তিনটি করে বাঘ হত্যা করা হয়। বাংলাদেশে সুন্দরবন অংশে প্রতিবছর তিনটিরও বেশি বাঘ চোরা শিকারীদের হাতে নিহত হচ্ছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বন্যপ্রাণী চোরাচালানের ওপর নজরদারিকারী সংস্থা “ট্রাফিক”। যুক্তরাজ্যভিত্তিক অলাভজনক সংস্থাটি আরো জানায়, গত চার বছর ধরে সুন্দরবনে বাংলাদেশ অংশে বাঘ হত্যার এই চিত্র দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশে খুব অল্প সংখ্যায় বাঘ অবশিষ্ট থাকলেও চামড়া, দাঁত, হাড়, মাথার খুলি ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য বাঘ হত্যার প্রবণতা বাড়তির দিকে। গত ২০ বছরে বাংলাদেশে ৫১টি বাঘ হত্যা করা হয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যের সময়টাতে প্রতিবছর গড়ে ৩.১টি বাঘ চোরা শিকারীদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে। অথচ ২০০০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে বছরে গড়ে ২টি বাঘ শিকারের ঘটনা ছিলো। তবে বাঘ শিকারের সংখ্যা বাড়ার কথা মানতে নারাজ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছে, শিকারের সংখ্যা ও বাঘের দেহাবশেষ পাওয়া যাওয়ার প্রবণতা বরং কমতির দিকে। বাংলাদেশের বন কর্মকর্তা মিহির কুমার বলেন, ‘সমপ্রতি দেখা যাচ্ছে যে বাঘের চামড়া ও হাড় উদ্ধার হওয়ার ঘটনা কমে আসছে। বাঘ হত্যা বন্ধ করার জন্য নজরদারি যেমন বাড়ানো হয়েছে তেমনি সংরক্ষণেরও নানা উদ্যোগ নিয়েছি আমরা’। ২০০০ থেকে ২০১৮ সালের বিশ্বজুড়ে বাঘ সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে ৩২টি দেশ ও অঞ্চলে কম করে হলেও ২৩৫৯টি বাঘ হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১৪২ টির ক্ষেত্রে বাঘের দেহাবশেষ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, যার বেশিরভাগ ঘটনাই আবার এশিয়া অঞ্চলে। বিশ্বজুড়ে বাঘ হত্যার ঘটনাগুলোর মধ্যে ৯৫.১ শতাংশ (১০৮৬টি ঘটনা) ঘটেছে এশিয়ার ১৩টি দেশে যাতে প্রাণ হারিয়েছে ২,২৪১টি বাঘ। প্রতিবছর গড়ে ১২৪টি বাঘের দেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। সুন্দরবনের বেঙ্গল টাইগার সংখ্যার হিসাবে গরমিল এতটাই যে বিভ্রান্তিতে পড়ে যেতে হয়। একেক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া হিসাব একেক রকম। কখনো বলা হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০, যা দেখে আপনি ‘স্বস্তিদায়ক’ ভাবতে পারেন। প্রায় একই সময় আরেক হিসাবে সংখ্যা তুলে ধরা হচ্ছে ২০০ বা ১০৬, যা দেখে আপনার বিস্ময় প্রকাশ না করার কোনো কারণ নেই। সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা জোয়ার-ভাটার পানির মতো এই বাড়ছে তো এই কমছে। তথ্যের এই গরমিল সুন্দরবনে বেঙ্গল টাইগারের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বন বিভাগ বিভিন্ন সময়ে বাঘের সংখ্যার ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়েছে। বন বিভাগের হিসাবে বাঘের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া ও কমে যাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। ২০০৪ সালে বন বিভাগ জানিয়েছিল, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ৪৪০। ২০০৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান ক্যামেরা-পদ্ধতিতে বাঘ গণনা করে জানান, বাঘের সংখ্যা ২০০। দুটো হিসাবই সঠিক ধরে নিলে বলতে হয়, মাত্র দুই বছরে বাঘ ২৪০টি কমে গেছে। ২০১০ সালে বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশের যৌথ জরিপে বাঘের সংখ্যা হয় ৪০০ থেকে ৪৫০। এই তথ্যও সঠিক ধরলে বলা যেতে পারে, চার বছরে বাঘের সংখ্যা বেড়ে ২০০৪ সালের অবস্থায় ফিরে গেছে। পাঁচ বছর পরের এক হিসাবে বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা কত এসেছে। ক্যামেরা-পদ্ধতিতে ২০১৫ সালে সুন্দরবনের বাঘ গণনা জরিপে বন বিভাগ জানায়, বাঘের সংখ্যা ১০৬। আর বাংলাদেশ ও ভারত মিলিয়ে পুরো সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১৭০ বলে জানানো হয়। পরের বছর ২০১৬ সাল থেকে বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড টিম বাঘ গণনা কাজ করে। এরপর ভারতের পক্ষ থেকে সুন্দরবনের পশ্চিমবঙ্গ অংশে বাঘের সংখ্যা ১০০ বলা হয়, কিন্তু বাংলাদেশের ফলাফল অজানাই রয়ে গেছে। বাঘের সংখ্যা জানতে বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড টিমের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেও সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের প্রধান বন সংরক্ষক সফিউল আলম চৌধুরীর বলেন, ২০১৫ সালে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘ ছিলো ১০৬টি। পরে বন বিভাগের বাঘ গণনায় পাওয়া গেছে ১২২টি। তার মতে, বাঘের সংখ্যা এখন বেড়ে ১৩০-এর কাছাকাছি হয়েছে। বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ ও বন্য শূকর। আগে ছিলো মহিষ। এখন তা নেই বললেই চলে। বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে ৬০ হাজার থেকে কিছু বেশি হরিণ থাকতে পারে। সাধারণত পাঁচ শত হরিণের জন্য একটি করে বাঘ থাকে বলা হয়। সেই হিসাবে সুন্দরবনে ১২০টির মতো বাঘ থাকতে পারে। যেভাবে বাঘ গণনা করা হয় : ক্যামেরা ট্র্যাপিং ও ট্রেইলিং পদ্ধতিতে সাধারণত আমাদের দেশে বাঘ গণনা করা হয়ে থাকে। যেসব পয়েন্টে বাঘের আনাগোনা বেশি, সেখানে গাছের সঙ্গে লাগিয়ে রাখা হয় স্থিরচিত্র তোলার ক্যামেরা। যখন বাঘ চলাচল করে, তখন ওই ক্যামেরায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি উঠতে থাকে। প্রতিটি বাঘের ডোরাকাটা দাগের ভিন্নতা রয়েছে, ছবি দেখে তা আলাদা করা হয়। প্রতিটি পয়েন্টে বাঘের ছবি নিয়ে সংখ্যা গোনা হয়। গাণিতিক পদ্ধতিতে সুন্দরবন এলাকার পুরো আয়তনের ওপর ভিত্তি করে সেই সংখ্যা থেকে মোট বাঘের একটা আনুমানিক হিসাব কষা হয়। ট্রেইলিং পদ্ধতিতে বাঘের হাঁটাচলার পথে পায়ের ছাপ দেখে বাঘের সংখ্যা গণনা করা হয়। ডোরাকাটা দাগের মতো বাঘের পায়ের ছাপেও ভিন্নতা রয়েছে। ছাপের নমুনা সংগ্রহ করে বাঘের মোট সংখ্যার হিসাব করা হয়। বাঘ গণনা প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বাঘের বসতি বেশি এমন তিনটি এলাকায় ক্যামেরা ট্র্যাপিং ও ট্রেইলিং করা হয়েছে। এই অঞ্চলগুলো হলো সাতক্ষীরায় সুন্দরবনের পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকা, খুলনায় সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্ট এবং বাগেরহাটের কটকা, কচিখালী ও সুপতি এলাকা। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় ২০১৭ সালে এবং খুলনা ও বাগেরহাটে এ বছর এই দুই পদ্ধতিতে বাঘ গণনার কাজ করা হয়েছে। এর থেকে পাওয়া বাঘের ছবি ও পায়ের ছাপ সংগ্রহ করে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এগুলোর মধ্য থেকে বাঘের একটি ধারণা পাওয়া গেছে। তবে এখনই তা প্রকাশ করতে চাইছে না বন বিভাগ। সুন্দরবনের বেঙ্গল টাইগার ভারতে ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউটে (ডব্লিউআইআই) বাঘের সংগৃহীত ছবি ও পায়ের ছাপের নমুনা পাঠানো হবে। ডব্লিউআইআইয়ের মতামত পাওয়া গেলে বাঘের সংখ্যা-সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করবে বন বিভাগ। চলতি বছরের শেষ দিকে বা ২০১৯ সালে জানা যাবে সুন্দরবনে বাঘের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে। বাঘ গণনা সম্পর্কে বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ডব্লিউআইআইয়ের সঙ্গে বন বিভাগের একটি সমঝোতা চুক্তি রয়েছে। ২০১৫ সালে বাঘ জরিপ চালানোর পরও সব তথ্য-উপাত্ত ডব্লিউআইআইয়ের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তাদের মতামত পাওয়ার পরই সেবার বাঘের সংখ্যা জানা যায়। এবারও একইভাবে সব তথ্য ও নমুনা তাদের কাছে পাঠানো হবে। বাঘের সংখ্যা সম্পর্কে ওয়াইল্ড টিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ধারণা, বাঘের সংখ্যা নিয়ে খারাপ সংবাদ নেই। আগের যে অবস্থা ছিলো, সেটি যদি থাকে, সেটাও বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় সুসংবাদ। কারণ, বাঘের ওপর প্রচণ্ড চাপ বনদস্যুদের চাপ, পাচারকারীদের চাপ। পাচারকারীরা বন বিভাগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।’ বাঘ রক্ষায় পিছিয়ে বাংলাদেশ : ২০০৯ সালে সরকার টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে। ২০১০ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বাঘ সম্মেলনে ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ ওই ঘোষণায় স্বাক্ষরও করেছে। এতে বলা হয়েছিল, বিশ্বের ১৩টি বাঘসমৃদ্ধ দেশ প্রতি দুই বছর পরপর বাঘ গণনা করবে। বাংলাদেশ ওই ঘোষণার পাঁচ বছর পর বাঘ গণনা শেষ করেছে। ভারত ২০১৩ সালে ও নেপাল ২০১৪ সালে ক্যামেরা-পদ্ধতিতে বাঘ গণনা শেষ করে। ২০১৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাঘ সম্মেলনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাঘ রক্ষায় সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনেও বাঘের সংখ্যা ৯০-এর কাছাকাছি চলে এসেছে বলে ভারতের গণমাধ্যমগুলো প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। ২০১৬ সালের ৭ নভেম্বর টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সুন্দরবনে ভারতের অংশে বাঘের সংখ্যা ছিলো ৭৬। পরের বছর ২০১৬ সালে বাঘ বৃদ্ধি পেয়ে ৮৫টি হয়েছে। বন বিভাগের তথ্য, বাংলাদেশে সুন্দরবনে ২০০১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৮ বছরে ৩৫টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্য লোকালয়ে আসার কারণে স্থানীয় জনতা ১৪টি বাঘকে হত্যা করেছে। বনদস্যুদের হাতে মারা গেছে ১০টি বাঘ। স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে আরও ১০টির। আর সিডরে মারা গেছে একটি বাঘ। সুন্দরবন অঞ্চলে বসবাসকারীদের বনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারলে বাঘের জীবনের ঝুঁকি কমবে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নূরজাহান সরকার। তিনি বলেন, বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের ছেলেমেয়েদের সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় বিনামূল্যে পড়ালেখার সুযোগ দিতে হবে। বনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে না পারলে বাঘের জীবনাশঙ্কা থেকেই যাবে। সুন্দরবনে বাঘ গণনায় যুক্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনে সাতক্ষীরা অংশের বাঘের অবস্থা কিছুটা ভালো। সেখানে বাঘের বসতি তুলনামূলক বেশি। সেখানে বাঘের খাদ্যের পরিমাণ বেশি। চোরা শিকারিদের উৎপাত তুলনামূলক কম। অন্যদিকে, খুলনা ও বাগেরহাট অঞ্চলে বাঘের অবস্থা খুবই করুণ। বনদস্যু ও শিকারিদের তৎপরতা সেখানে অনেক বেশি। লেখক : শিক্ষার্থী, ইন্ডিপেন্ডেট বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা এমএআই